Loading proofofbrain-blog...

শহুরে মেলা।


IMG-20220627-WA0003.jpg

মেলা আমাদের দেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি।তবে শহরেও বিভিন্ন উৎসবে এখন মেলার দেখা পাওয়া যায়,যা গ্রামীণ -শহুরে সংস্কৃতি হয়ে মিলে যাচ্ছে!এখন বিভিন্ন উৎসবের প্রারম্ভিক মুহূর্ত শুরু হয় মেলা দিয়ে।দেখা কোন একটা ফাঁকা মাঠ বা জায়গা পেলেই সেখানেই ছোট্ট পরিসরেই মেলার আয়োজন করা হয়।তার মধ্যে গ্রামীণ ভাব না থাকলেও মেলার উত্তেজনা সবার মধ্যেই দেখা যায়।সামনেই ঈদুল আযহা।এই রেশ থেকে বিভিন্ন জায়গায় মেলার আয়োজন।আমাদের বাসা থেকে খানিক দূরেও একটি মেলার আয়োজন চোখে পরলো। আমারও দল বেধে চলে গেলাম মেলা দেখতে।

মেলা ছোট্ট পরিসরে হলেও মেলার একটা ব্যাপার বেশ ভালো লেগেছে।আগের মেলাগুলোতে প্রধান আর্কষণ ছিলো নাগরদোলা।এখন শুধু নাগরদোলাই না সাথে যুক্ত হয়েছে আরো নানান ধরনের রাইড।যে রাইডগুলো আগে আমরা বিভিন্ন নামি-দামি পার্কের ভিতরে দেখা যেত।সাথে ছোট্টবেলার ছোট্ট স্মৃতিতে থাকা কিছু ঘটনা মনে পরে গেল!আমাদের ছোটবেলায় কিন্তু এখনকার মতো অনেক পার্ক ছিলো না।ছিলো নামকরা একটাই শিশু পার্ক!মধ্যবিত্তের সার্মথ্যর মধ্যে তা ছিলো সবচেয়ে উত্তম।এরপর দিন আগায়,নতুনত্ব আসে!যার ফলাফলে যেটা হলো ওয়ান্ডারল্যান্ড নামে নতুন একটি শিশুপার্ক বানানো হলো।যেহেতু সেটা বেসরকারি মালিকানাধীন তাই তার ভিতরে থাকা রাইডগুলো ছিলো উচ্চমূল্যের। তবে এর প্রতি আর্কষনের একমাত্র কারন ছিলো ভিন্নধারার কিছু রাইড।বাইরের দেশের চিল্ড্রেন পার্কের সাথে তা ছিলো অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।তাই বাচ্চাদের আগ্রহ অনেক গুনে বেড়ে যায়।কিন্তু সে সময়ে তা ছিলো বেশ ব্যয়বহুল!যা উচ্চবিত্ত পরিবারের জন্য আনন্দের হলেও মধ্যবিত্তদের জন্য কিছুটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার বটে!তবে এতকিছুর মাঝেও বাবা আমাদের দুই বোনকে ঠিকই নিয়ে যেতেন।কিন্তু শর্ত থাকে আমরা হয়তো যেকোন দুইটি রাইডে উঠতে পারবো। যেই বলা সেই কাজ! আমরা প্রথম রাইডে উঠে সারা পার্ক দৌড়ে বেড়াতাম আর বাছাই করতাম পরের বার এলে কোনটায় উঠা যায়।এভাবে ভেবে চিন্তে দৌড় ঝাপে বিকেল গড়িয়ে যখন শেষ প্রান্তে তার আগ মুহূর্তে আমরাও আমাদের শেষ রাইডে উঠে বাসায় ফেরার পথ ধরতাম।ক্লান্তিময় শরীরে বাসায় ফিরেও সারাক্ষণ পার্কের কথাই ভাবতাম।আবার কবে যাব!কি উত্তেজনাপূর্ণ দিন আমাদের!

IMG-20220627-WA0000.jpg

ছোটবেলার সেই ফ্যান্টাসি রাইডগুলো যখন এই ছোট্ট মেলায় দেখি তখন সত্যি অবাকই হতে হয়!যা আবার অতি স্বল্প মূল্যে!অর্থাৎ সবার জন্যই সহজলভ্য।এমনকি ছিন্নমূল পর্যায়ের শিশুরা অতি আনন্দের সাথে তাতে উঠছে।সবার সামর্থ্যের মধ্যে থাকায় সব শ্রেণীর বাচ্চারাই সেখানে যাচ্ছে। তাদের আনন্দ উল্লাসে মেলা মধ্যে একটা গম গম ভাব চলে এসেছে।আশেপাশের সবাই এসেছে মেলা দেখতে!শহরের মেলা তাই এখানে একটু শহুরে ভাবটাও আছে।সারির দোকানগুলোতে বেশিরভাগই হলো মেয়েদের সাজসজ্জা জিনিসপত্র! তা না হলে কি মেলা জমে?!সবাই কিছু না ছাড় দিচ্ছে মেলা উপলক্ষে। তাই প্রায় সব দোকানগুলোতে ভিড় লেগেই আছে।তাছাড়া ম্যাজিক শো চলছে সেখানে সম্মানির বিনিময়ে চলছে ম্যাজিক শিখানো।

IMG-20220627-WA0001.jpg

গৃ্হস্থালির অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও মেলাতে পাওয়া যায়।এবার আসি শেষের দোকানগুলোতে।এখানে ময়রা তা পসরা সাজিয়েছে মানে বিভিন্ন প্রকার মিষ্টান্ন!তার মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় হলো গুরের জিলাপি আর মুরালি।দেখা যায় গুরের জিলাপি না খেলে মেলায় যাবার তৃপ্তি পাই না।পুরোনো অভ্যাসটা পরিপূর্ণ করে পিয়াজু আর জিলাপি নিয়ে ফিরলাম বাসার পথে!ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত মেলা, হয়তো আবার আসবো।ব্যস্ত নগরীর ছোট্ট আনন্দ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
6 Comments